ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট ::  ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বুকে টেনে নিয়ে সান্ত্বনা দেন- ফাইল ছবি

আগামী ৪ অক্টোবর নোয়াখালীর ভাসানচর পরিদর্শনে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে নেয়া প্রকল্পটি এদিন উদ্বোধন করবেন তিনি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের শরণার্থী সেলের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ হাবিবুল কবীর চৌধুরী সোমবার এ তথ্য জানান।

ইতোমধ্যে গতকাল রোববার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা ভাসানচর পরিদর্শন করেছেন।

শরণার্থী সেলের প্রধান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আগামী ৪ অক্টোবর ভাসানচর পরিদর্শনে যাবেন। সেখানে যে স্ট্র্যাকচারগুলো হয়েছে সেগুলো তিনি উদ্বোধন করবেন। রোহিঙ্গাদের জন্য সেখানে থাকার ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সাইক্লোন সেল্টার, মালামাল রাখার গোডাউন তৈরি করা হয়েছে। বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। সমুদ্র থেকে মালামাল নামানোর জন্য জেটি রয়েছে।’

হাবিবুল কবীর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সবকিছু উদ্বোধন করবেন। তাকে সবকিছু দেখানো হবে।’

সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গা থাকতে পারবেন জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘পুরো প্রকল্পের কাজের ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। বাকি কাজও দ্রুত শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’

‘আমরা তাদের সেখানে (ভাসানচর) নেয়ার আগে উদ্বুদ্ধ করব। রোহিঙ্গা নেতাদের নিয়ে গিয়ে দেখাব। আমরা বলব, তোমারা এখানে থাকলে ভালো থাকবা।’

সরকার চায় আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো ভাসানচরেও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিক, জানিয়ে শরণার্থী সেলের প্রধান বলেন, ‘জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর ভাসানচর নিয়ে একটু ভয় ছিল- বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে রোহিঙ্গারা থাকতে পারবে কি না, তাদের প্রশ্ন ছিল। তারা ভাবছিল- যাতায়াত কীভাবে করবে? চিকিৎসা কীভাবে হবে? তারা আমাদের কাছে লম্বা চিঠি লিখেছিল। আমরা গতকাল (রোববার) তাদের ভাসানচর দেখিয়ে এনেছি। তারা হ্যাপি। যদিও তারা কিছু ফাইন্ডিংস দিয়েছে, আমরা সেগুলো অ্যাড্রেস করব।’

‘ভাসানচরের তৈরি করা চারতলা সাইক্লোন সেল্টারগুলো আমরা বহুমুখী কাজে ব্যবহার করব। সেখানে মেডিকেল সেন্টার হবে, বাচ্চাদের পড়ানোর ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে মাছ চাষের সুযোগ থাকবে। গরু, মহিষ-ভেড়া পালনেরও সুযোগ থাকবে।’

উদ্বোধনের পর কবে নাগাদ রোহিঙ্গা পুনর্বাসন শুরু হবে জানতে চাইলে মোহাম্মদ হাবিবুল কবীর চৌধুরী বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে কবে থেকে স্থানান্তর করা হবে, সেটা এখনও ঠিক করা হয়নি।’

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা ও মানবতাবিরোধী ধ্বংসযজ্ঞের কারণে রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলা এবং বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যাংছড়ি উপজেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী ক্যাম্পসহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

মিয়ানমারের সীমান্তে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর চেকপোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে নতুন করে রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর অভিযান চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। তখন থেকে রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। বাংলাদেশে এখন ১১ লাখেরও বেশি নিবন্ধিত রোহিঙ্গা রয়েছে।

পরে সরকার নোয়াখালীর হাতিয়ায় ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রাথমিকভাবে এক লাখ রোহিঙ্গার পুনর্বাসনের জন্য ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকার এই প্রকল্প নেয়া হয়।
উখিয়া নিউজ ডটকম।প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বরে মধ্যে বাস্তবায়ন হবে। প্রকল্পের আওতায় রয়েছে, চরের ভূমি উন্নয়ন ও তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণ, থাকছে এক হাজার ৪৪০টি ব্যারাক হাউস। আরও থাকবে ১২০টি সেল্টার স্টেশন, মসজিদ, দ্বীপটির নিরাপত্তার জন্য নৌবাহিনীর অফিস ভবন ও কর্মকর্তাদের জন্য বাসভবন। থাকছে অভ্যন্তরীণ সড়ক, পানি সরবরাহ ও নিষ্কাশন অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি প্রকল্প এলাকায় নলকূপ ও পুকুর। এ ছাড়া খাদ্য গুদাম, জ্বালানি ট্যাংক, হেলিপ্যাড, চ্যানেল মার্কিং ও মুরিং বয়া, বোট ল্যান্ডিং সাইট, মোবাইল ফোন টাওয়ার, রাডার স্টেশন, সিসিটিভি, সোলার প্যানেল, জেনারেটর ও বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনও নির্মাণ করা হচ্ছে ভাসানচরে।
সুত্র্। জাগো নিউজ

পাঠকের মতামত: