ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়া সিটি হাসপাতালে ঈদের রাতে একসঙ্গে জন্ম নিয়েছে সাত নবজাতক

চকরিয়া সিটি হাসপাতালে ঈদেররাতে জন্ম নেয়া সাত নবজাতক কুলে নিয়ে চিকিৎসক, স্বজন ও হাসপাতালের কর্মকর্তারা।

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::

চকরিয়া উপজেলা সদরের পৌরবাস টার্মিনালে অবস্থিত বেসরকারী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান চকরিয়া সিটি হাসপাতালে ঈদের দিন রাতে একসঙ্গে জন্মলাভ করেছে সাত নবজাতক। চারটি নবজাতক নরমাল পদ্ধতিতে ভুমিষ্ঠ হলেও অপর তিনটি সিজার অপারেশনের মাধ্যমে পৃথিবীর আলোর মুখ দেখেছে। বর্তমানে ভুমিষ্ট হওয়া সাতটি নবজাতক ও তাদের প্রসুতি মায়েরা গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সুস্থ আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক জুবাইদুল হক।

এদিকে চকরিয়া সিটি হাসপাতালে একসঙ্গে সাতটি নবজাতকের জন্মলাভের খবরে প্রশংসা করেছেন হাসপাতালটির চেয়ারম্যান চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম। তিনি বলেন, হাসপাতালে আগত সকল ধরণের রোগীদের মাঝে কাঙিত সেবা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে প্রসুতি ও নবজাতক শিশু রোগীদের সেবাদানের ক্ষেত্রে চিকিৎসক ও নার্সদেরকে দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করতে হবে।

এমপি জাফর আলম বলেন, চকরিয়া সিটি হাসপাতাল শুরু থেকে সর্বশ্রেণীর রোগীদের জন্য সেবার দরজা খোলা রাখা হয়েছে। এখানে অল্প টাকার বিনিমনে রোগীদের মাঝে ভালো সেবা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেইজন্য হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট সবাইকে সেভাবে নির্দেশ দিয়েছি।

হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জুবাইদুল হক বলেন, আমাদের চেয়ারম্যান আলহাজ জাফর আলম এমপির দিকনির্দেনার আলোকে বাণিজ্যিক প্রথার পরিবর্তে আমরা হাসপাতালে রোগীদের মাঝে ভালো মানের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। এরই আলোকে ইতোমধ্যে হাসপাতালে বিশেষ করে প্রসুতি রোগীদের জন্য বিশেষ ছাড় ঘোষনা দিয়েছি।

বর্তমানে প্যাকেজের আওতায় প্রসুতি রোগীদের মাঝে সেবা নিশ্চিতে তাদের কাছ থেকে নরমাল ডেলিভারী খরচ বাবত তিনহাজার টাকা ও সিজার অপারেশন রোগীদের জন্য সিটভাড়াসহ মাত্র তেরহাজার টাকার প্যাকেজ ঘোষনা করেছি। বেসরকারী অন্য হাসপাতাল গুলোর তুলনায় আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা খরচ খুবই অপ্রতুল।

তিনি বলেন, আমাদের হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার অভিজ্ঞ প্রসুতি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাক্তার অনন্যা সরকার ও সার্জারী ও নবজাতক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ত্রিদিব রায় সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রসুতি রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। সল্প খরচে ভালো মানের সেবা নিশ্চিত হবার কারনে বর্তমানে আমাদের হাসপাতালে সবধরণের রোগীর পাশাপাশি নিয়মিত প্রসুতি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

জানা গেছে, চকরিয়া সিটি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার অনন্য ভুমিকার কারনে এবার ঈদের আগেরদিন মঙ্গলবার ও ঈদের দিন বুধবার অন্তত সাতজন প্রসুতি রোগী ভর্তি হন। এরপর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার প্রসুতি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাক্তার অনন্যা সরকার ও সার্জারী ও নবজাতক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ত্রিদিব রায় সমন্বয়ে নার্সদের সহায়তায় ঈদের দিন রাতে একসঙ্গে সাত নবজাতক শিশু জন্ম দিয়েছেন ভর্তি হওয়া এসব প্রসুতি মায়েরা। তাদের মধ্যে চারটি নবজাতক নরমাল পদ্ধতিতে ভুমিষ্ঠ হলেও অপর তিনটি সিজার অপারেশনের মাধ্যমে পৃথিবীর আলোর মুখ দেখেছে। বর্তমানে ভুমিষ্ট হওয়া সাতটি নবজাতক ও তাদের প্রসুতি মায়েরা সুস্থ আছেন।

হাসপাতালের জরুরী বিভাগ সুত্র জানায়, ঈদের দিন রাতে জন্ম নেয়া সাত নবজাতকের প্রসুতি মায়েরা হলেন চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ঘুনিয়া গ্রামের সুজিত বড়–য়ার স্ত্রী বিউটি বড়–য়া, চকরিয়া পৌরসভার ভরামুহুরী এলাকার নুরুল আলমের স্ত্রী শারমিন আক্তার, চকরিয়া উপজেলার বানিয়ারছড়া এলাকার হারুনর রশিদের স্ত্রী আয়েশা বেগম, একই উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের মরংঘোনা এলাকার আরাফাত হোসেনের স্ত্রী মুর্শিদা বেগম, লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী সুইটি বেগম, চকরিয়া পৌরসভার ভরামুহুরী এলাকার আবু তাহের এর স্ত্রী পাখী আক্তার ও কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর ধুরং ইউনিয়নের আবদুর রহিমের স্ত্রী খালেছা বেগম। তাদের মধ্যে সুইটি বেগম, পাখী আক্তার ও খালেছা বেগম সন্তান জন্ম দেন সিজার অপারেশনের মাধ্যমে।

এদিকে একসঙ্গে সুস্থভাবে সাত নবজাতকের জন্মলাভের ঘটনাটি স্বরণীয় করে রাখতে ঈদের দিন হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির উদ্যোগে আয়োজন করা এক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানে। এদিন হাসপাতালের চেয়ারম্যান আলহাজ জাফর আলম এমপির নির্দেশে জন্ম নেয়া সাত নবজাতকের পরিবারের হাতে হাসপাতালের পক্ষথেকে বিশেষ পুরুস্কার তুলে দেয়া হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার ত্রিদিব রায় ও ডাক্তার অনন্যা সরকার এবং হাসপাতালের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক জুবাইদুল হক ছাড়াও হাসপাতালের সকল পরিচালক, চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। ##

পাঠকের মতামত: