ঢাকা,বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় বৃদ্ধ বাবাসহ এক পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে জখম, বিচার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::  কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নে শান্তিবাজার এলাকায় দিনদুপুরে এক ব্যবসায়ীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা। তাকে বাঁচাতে গিয়ে এসে একই ভাবে হামলার শিকার হয়ে ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন আহত ব্যবসায়ীর বৃদ্ধ বাবা, ভাই ও বোন। এ ঘটনায় হুরে জান্নাত মিনু বাদি হয়ে চকরিয়া থানায় এজাহার জমা দিয়েছেন।

আহতরা হলেন, বরইতলী ইউনিয়নের দক্ষিণ বরইতলী ফতেহ আলী সিকদার পাড়ার ছিদ্দিক আহমদের ছেলে এনামুল হক (৬৫), এমদাদুল হক (২৫), ইমরানুল হক (১৭), মেয়ে হুরে জান্নাত মিনু (২৬)।

চকরিয়া থানায় জমা দেয়া এজাহারে বাদি হুরে জান্নাত মিনু উল্লেখ করেন, প্রতিবেশী হিসেবে নানা বিষয় নিয়ে স্থানীয় মৃত এজাহার আহমেদের ছেলে নুরুল আলম হায়দারের পরিবারের সাথে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এর জেরে ৯ জুন তার (বাদিনীর) ছোট ভাই এমদাদুল হক শান্তিবাজারস্থ তাদের ইলেকট্রনিকস পণ্য বিক্রির দোকানে যাবার পথে বানিয়ারছরা-মগনামা সড়কের উপর অতর্কিত হামলা করে নুরুল আলম হায়দারের ছেলে তিতুমীর হায়দার (২৪)। ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় করা আঘাতটি বাম হাত দিয়ে প্রতিহত করতে গিয়ে হাতে গভীর ক্ষত হয়েছে।

এসময় তিতুমীরের ভাই আইনুল হায়দার, শেখওয়াত হায়দার কচি, বোন ছমকি বেগম, তাদের বাবা নুরুল আলম হায়দারও ঘটনাস্থলে এসে বাদিনীর ভাই এমদাদুল হককে লোহার রড় ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। হামলার খবর জেনে তার ভাই ইমরানুল হক, বাবা এনামুল হক ও বাদিনী মিনু ঘটনা স্থলে এলে ভাই ইমরান ও বাবাকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে জখম করা হয়। বাদিনীকে দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে ফোলা জখম করা হয়।

তাদের শোর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় এবং আহত জখমীদের প্রথমে উপজেলা হাসপাতালে নিলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানেই সবাই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে, তাদের অভিযোগটি এখনো মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। এদিকে, আহতদের অবস্থা এখনো সুবিধাজনক নয় বলে জানিয়েছেন সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শাহীন আবদুর রহমান।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এমদাদুল হক বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ভিডিও লাইভে বলেন, তার বাবা এনামুল হক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমল থেকে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের দায়িত্বশীল ছিলেন। তার পরিবারটি এলাকায় আওয়ামী পরিবার হিসেবে পরিচিত। কিন্তু নুরুল আলম হায়দারের পরিবার চারদলীয়জোট সরকারের সময় বিএনপির পুজারি হলেও এখন সুবিধাভোগী আওয়ামীলীগ। সন্তানদের দিয়ে নানা অপকর্ম চালান তারা।

এটি ধীরে ধীরে বেড়ে গেছে। এখন তারা এমন ভাবে তাদের (এনামুলের) পরিবারের বিরুদ্ধে লেগেছে তারা এলাকায় যেন রিফুজি। তার নিজের উপর, বৃদ্ধ বাবা ও ভাইয়ের উপর হামলা এবং পরিবারে গিয়ে নারীদের লাঞ্চিত করার বিচার পেতে স্থানীয় সাংসদ জাফর আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, চকরিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তারা এখনো আশংকাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলেও দাবি করেন ভিডিও লাইভে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে, নুরুল আলম হায়দারের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সংযোগ না পাওয়ায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.হাবিবুর রহমান জানান, মারামারির ঘটনায় একটি অভিযোগ পাওয়ার পর তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়ে হারবাং পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দু’পক্ষই আহত হয়েছে খবর পেয়ে তা তদন্ত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়। রিপোর্ট এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।##

পাঠকের মতামত: